যুদ্ধ ও জিহাদ (War and Jihad) – আহমদ তৌফিক চৌধুরী (Bengali)

Source:  www.ahoban.org

যুদ্ধ ও জেহাদ

যুদ্ধ কে আরবীতে বলে কিতাল । যুদ্ধের নাম জেহাদ নয় । জেহাদ জাহদ শব্দ থেকে । এর অর্থ পরিপূর্ণ রূপে চেষ্টা প্রচেষ্টা করা (তাজুল উরুস ) নিজের প্রবৃত্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করা সব চাইতে বড় জেহাদ , জেহাদে আকবর (মেশকাত) মহানবী (সাঃ) বলেছেন নিজেদে ন নফসের বিরুদ্ধে যে জেহাদ করে সেই বড় পাহলোয়ান । শয়তান নফসে আম্মারা বা কুকর্মের বিরুদ্ধে লড়াই করা হল জেহাদে আকরব । ওয়া জাহেদ হুমবিহি জেহাদা (সুরা-ফুরকান) অর্থাৎ – কোরআন দিয়ে যুক্তি প্রমান দিয়ে জেহাদ করা কেবলে জেহাদে কবীর । খোদার নির্দেশিত পথে সর্ব প্রকার চেষ্টা প্রচেষ্টার নাম ইহল , জেহাদ ফি – সাবিলিল্লাহ। কোরআন বলে , ওয়াল্লাজিনা জাহাদু ফিনালানাহ দিয়ান্নাহুম ছুবুলানা । কোরআনে আছে, তুজাহেদুনা ফি সাবিলিল্লাহি বি আমওয়ালিকুম ওয়া আনফুসিকুম । অর্থাৎ আল্লাহর পথে সম্পদ এবং জীবন দ্বারা সংগ্রাম করা কেউ ৎকৃষ্ট জেহাদ বলা হয়েছে । প্রথমেই বলা হয়েছে মাল বা সম্পদ দিয়ে জেহাদ করা । তারপর জীবন দিয়ে জেহাদ করার কথা বলা হয়েছে । আল্লাহর রাস্তয় ধনের জেহাদ হল ইসলাম প্রচারে চাঁদা দেয়া । ধন সম্পদ ব্যয় করে জনহিতকর কাজ করাও জেহাদ । মানুষের কল্যাণে মানুষের সাহায্যে এগিয়ে আসার নামও জেহাদ । জীবন বা নফস দিয়ে জেহাদ করার অর্থ হল সমস্ত শক্তি যার যা আছে তা দিয়ে সংগ্রাম করা । মৌখক প্রচার লেখনির মাধ্যমে প্রচার গবেষণা সাধনা করাও নফসের জেহাদ, আল্লাহর জন্য জীবন দান করার নাম ও জেহাদ । ইসলাম ধর্মের জন্য বাধ্য হয়ে আত্মরক্ষা মূলক যুদ্ধকেও একটি ক্ষুদ্র জেহাদ বলেছে । তবুক যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে নবী করীম (সাঃ) বলেছিলেন, ওয়াজায়াল নাল জেহাদীল আসগারে ইলাল জেহাদিল আকবারে (কাশশাফ) অর্থাৎ আমরা এখন ছোট জেহাদ (আসগার) থেকে বড় জেহাদের (আকবর) দিকে যাচ্ছি । ছোট জেহাদ হল ধর্ম যুদ্ধ আর বড় জেহাদ হল আত্মশুদ্ধির জেহাদ । দুঃখের বিষয় আজ কাল মুসলমানেরা মহানবীর (সাঃ) নির্দেশকে উল্টিয়ে দিয়ে যুদ্ধের জেহাদকে জেহাদে আকবর এবং নফসের জেহাদকে জেহাদে আসগর বানিয়েছে । মহানবী (সাঃ) বলেছিলেন ইয়াতি আলান নাসে জামানুন কামা আতা আলা বনি ইসরাইল। অর্থাৎ – এমন এক জামানা আসবে যখন মসুলমানেরা ইহুদীদের রীতি নীতি গ্রহণ করবে । হুবহুই হুদীদের মত হয়ে যাবে স্বভাব চরিত্রে । আজ মুসলমানেরা তাই হয়েছে । ক্ষমা প্রেম প্রীতি বির্সজন দিয়ে তারা ইহুদীদের মত নিষ্ঠুর হয়ে গেছে। কথায় কথায় তারা বোমা মারে অস্ত্র ধরে । নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে নারী শিশু এবং বৃদ্ধ দেরকে নির্মম ভাবে হত্যা করে ,আজও লামারা নিজেদের নামের শেষে জেহাদী লকব লাগায় ।আসলে এরা জেহাদী নয় ফাসাদী ।আলকায়দা, তালেবান, জামাতে মুজাহিদিন হরকতুলজেহাদ, লস্করে তৈয়েবা ইত্যাদির নাম শুনলে অমুসলমানকে নমুসলমান দের ও ঘুম হারাম হয়ে যায় । এরা সুন্দর কে ধ্বংস করে । এরা মসজিদ, মন্দির এবং গীর্জায় প্রার্থনার মানুষকে বোমামারে, হত্যাকরে ।পঙ্গু করে দেয় ।এদের কবল থেকে আজকে উইনিরাপদ নয় । ইন্দোনেশীয়া থেকে আলজিরিয়া, আফ্রিকা থেকে পাক ভারত উপমহাদেশের সাধারণ মুসমানরা পর্যন্ত এদের ভয়ে সদ্য ভীত । চব্বিশটি মুসলীমদেশকে আমেরিকা গুন্ডারা ষ্ট্ররূপেচিহ্নিতকরেছে। ইউরোপ আমেরিকা বাসীর কাছে মুসলমান অর্থ হল নির্দয়, নিষ্ঠুর, খুনী, আত্মঘাতী বোমা হামলা কারী । তারা বলে কি তাবের ইসলাম আর মুসলমানের ইসলাম এক নয় । কাগজেই সলাম অর্থ শান্তি হলে ও মুসলমান মৌলবাদীরা শান্তির শত্রু মানবতার দুশমন । হায়! মেঘের আঁড়ালে যেমন সূর্য ঢাকা পড়ে তেমনি তথাকথিত মুসলমানের আঁড়ালে আজ পবিত্র ইসলাম ঢাকা পড়েছে । ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন ।
ইংরাজদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা সংগ্রামে অমুসলমানদের শ্লোগান ছিল ইনকেলাব জিন্দাবাদ আর ঢাল নাই তলোয়ার নাই মুসলমানদের শ্লোগান ছিল লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান । যুক্তিকে নয় প্রমান নয় শুধু জঙ্গ আর জঙ্গ । মহানবী (সাঃ) বলে গেছেন, এমন এক সময় আসবে যখন মুসলমানেরা ইসলাম নাম ব্যবহার করবে তবে তা প্রকৃত পক্ষে ইসলাম হবে না । তাহ বেনামে মাত্র ইসলাম । তাদের কাছে কোরআন থাকবে তবে শিক্ষার উপর কোন আমল থাকবে না , যদিও তারা কোরআন পড়বে খতমের উপর খতম দিবে । বড় বড় সুন্দর মসজিদ হবে কিন্তু তাতে প্রকৃত হেদায়েতের লোক পাওয়া যাবেনা । ঐ সব মসজিদ যেসব আলেমের দখলে থাকবে তারা শুধু ফেৎনা ফাসাদ করবে, ঐসব ফেৎনাবাজ ফতোয়াবাজ আলেম আকাশের নীচে নিকৃষ্টতম জীব হবে । নিকৃষ্টতম জীব এজন্য যে অন্য কোন জীব এদের মত অনিষ্টকর হবেনা (মেশকাত শরীফে বর্ণিত হাদিসের ব্যাখ্যা )ঐসব ফেসাদী মোল­ারা শুকর ও বানরের স্বভাব প্রাপ্ত হবে (কানজুল উম্মাল ) এই হাদিসে কথিত মোল্লাদের কে কিছুটা সম্মান দেখিয়ে শুকর ও বানর বলা হয়েছে । পূর্ব বর্তী হাদিসে শুকর ও বানর নিকৃষ্ট (আকাশের নীচে সকল জীবের চাইতে ) বলা হয়েছে । কথাটি আমার ছোট মুখের নয় মহামানব সত্য নবী , মহানবী ও বিশ্বনবীর । মোল্লারা যদি একথার প্রতিবাদ করতে চায় তাহলে ইসলামের নবীর বিরুদ্ধে মিছিল বের করতে পারে । মহানবী(সাঃ)এও বলেছিলেন যে, ইসলামকে মুসলমানরা ৭৩ খন্ডে ভাগ করে ফেলবে । ৭২ দল হবে দোজখী শুধু একটি দল হবে জান্নাতি । ঐ দলটি হবে মহানবীর দলের মত জামাত (মেশকাত) মহানবী (সাঃ) বলেছিলেন ধর্ম রক্ষার্থে যুদ্ধ করবে মালে গনী মতের জন্য নয় । কোন জাতি কে ধোকা দিবেনা । মৃতদের অপমান অসস্মান করবে না । শিশু , স্ত্রীলোক, বৃদ্ধদের কে হত্যাক রবেনা । ইবাদত গৃহে অবস্থিত ধর্মীয় লোকদেরকে আক্রমন করবেনা । মানুষের সঙ্গে এহসান করবে ও শান্তি স্থাপনের চেষ্টা করবে (মুসলিম-আবুদাউদ ) পুরোহিত, পবিত্রস্থান, ফলদার বৃক্ষ এবং জনবসতি ধ্বংস করবে না (মোয়োত্তা) এই সব নীতি মেনে কি আজকাল যুদ্ধ করা সম্ভব? বোমা নিক্ষিপ্ত হলে শিশু ¯ত্রীলোক বৃদ্ধ পুরোহিত জনবসতি ফলদার বৃক্ষ ফসল ধর্ম স্থানকিরক্ষা পাবে। না কখন ও নয় ।অত এব বোমা দিয়ে যুদ্ধ করা ইসলামী যুদ্ধ নয় । বোমার ব্যবহার নবীর সন্নাত অনুযায়ী নিষিদ্ধ ।জেহাদী ফসাদী মোল্লারা মোল্লা ওমর এবং উসামার নেতৃত্বেযা করছে তাহারাম, জগত বাসীতে আমরা জানিয়ে দিতেচাই, আজ কাল মৌলবাদীরা যা করছে তা ইসলাম নয় । তাদের কর্মকান্ড মহানবীর আদর্শের খেলাফ।

আব্দুল গাফফার চৌধুরীর একটি শেখায় পড়েছিলাম এক তালেবান মোল্লা এক জন মহিলাকে ধরে নিয়ে যায় বলাৎ কার করার জন্য । মহিলাটি হাতে পায়ে ধরে কান্না কাটি করতে থাকে তার ইজ্জত নষ্ট না করার জন্য । তালেবান তখন উত্তেজিত, কোন কথাই তার কানে যাচ্ছে না । শেষ পর্যন্ত কিছুটা নিরাপদ থাকার জন্য মহিলাটি বলল ,ঠিক আছে তবে কনডম ব্যবহার কর । মোল্লা তালেবান বলল, আস্তগফিরুল্লাহ’আমি কি নাসারাদের পদ্ধতি গ্রহন করতে পারি? এই হল উগ্র মৌলবাদীদের ইসলাম প্রীতি । ইয়ে মুসলমান হ্যায়? জিনহে দেখকে শরমায়ে ইয়াহুদ? ইহুদীরা ও এদেরকে দেখে লজ্জা পায় । কথাটি আমার নয় মৌলবাদীদের প্রিয় কবি ইকবালের । আজ কাল কার মুসলমানরা যদি প্রকৃত মুসলমান হত তাহলে বুশের হাতে নির্যাতিত হতনা ।আল্লার সাহায্য অবশ্যই নেমে আসত । বুশের আবস্থা ফেরাউন ও নমরুদের মত হত । কথিত আছে হালাকু খান যখন বাগদাদ আক্রমন করে তখন এক ওলি আল্লার কাছে মুসলমানরা গিয়ে বলল, আমাদের হেফাজতের জন্য দোয়া করুন । ঐ ওলী বললেন, আমার কাছে ইলহাম হয়েছে- ইয়া আইউহাল কুফফারু উকতুলুল ফুজ্জার, হে কাফেরগণ, পাপীদের কে হত্যা কর । যারা অন্যায় ভাবে মানুষ হত্যা করে তাদের সমন্ধে আল্লাতালা বলেনঃ মান কাতালা নাফসান বিগায়রি”নাফসিন আও ফাসাদিন ফিল আরদে ফাকা আন্নামা কাতালান নাসা জামিয়ান (মায়েদা৩৩আয়াত) অর্থাৎ – কেহ কোন ব্যক্তিকে কোন ব্যক্তির হত্যার বদলা ব্যতিরেকে অথবা দেশে কলহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কারন ব্যতিরেকে হত্যা করলে সে যেন সমগ্র মানবমন্ডলী কে হত্যা করল । তার পর বলা হয়েছে, আর যে কেহ একটি জীবকে বাঁচাল সে যেন সমস্ত মানবমন্ডলী কে বাঁচাল । এই হল ইসলামের শিক্ষা । যারা বিনা কারনে নিরপরাধ মানুষকে বোমা মেরে হত্যা করে, প্রার্থনারত মানুষকে গুলি মারে তারা মানবতার শত্রু , তারা বিশ্বমানবের খুনী , মানবজাতির হত্যাকারী, তারা মুসলমানত নয় ইতারা মানুষ নামে অযোগ্য । এরা আকাশের নীচে নিকৃষ্টতম জীব । আত্মঘাতি বোমা হামলা ইসলামে হারাম । কারন এই হামলার সঙ্গে আত্মহত্যা জড়িত । যারা আত্মহত্যা করে তাদের জানাযা পড়া বৈধ নয় ।

বিস্তারিত পড়ুন

Categories: Bangla, Bangladesh, Jehad, War

Tagged as: ,

Leave a Reply